কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৩

১৭ আশরাফুল কবীর

তিনটি কবিতা
আশরাফুল কবীর



প্রহরী

তিথি নক্ষত্রের হিসেব নিকেশ কিছুই বোঝা হয়ে ওঠেনি
বোঝা হয়ে ওঠেনি ছায়াভরা ঘরের অলৌকিক নির্জনতা
ছানাবড়া চোখে হিম-প্রত্যুষকাল।

শুধু গ্রহণলাগা সময়ের ব্যবধান।
আমলকির বনে উচ্ছল হয়ে ওঠে
পাখা-উড়োনো কিছু ঝিঁঝিপোকা,
রাত-সমুদ্দুরের নিরেট চত্বরে কল্লোল তুলে
বিজনপথে বাঁক নেয় এক দলছুট মৌটুসি।
টুইট-টুইট, টুই-টুই, টুইই...

ধূপধুনোর যোগসাজশে আচ্ছাদিত মন-মহুকুমা,
বুনো পাখির ওমে স্থির হয়ে থাকা স্বচ্ছসলিলা ঝংকার তোলে
রাত্রি-প্রতিমার সদরবাড়ি, অন্দর, অন্ত:পুরে।

ভরমৌসুমে ঠাঁয় দাঁড়ানো প্রতিমা
একপশলা জলসিঞ্চনেই হুড়কো খুলে এগিয়ে আসে।



প্রতিচ্ছবি

মাঝে মাঝেই ঝিলিক দিয়ে ওঠে শেওলা-পড়া ঘাট
কাঁখ-কলসির চমকে দেওয়া পিঠ, ঘটি-বাটির অবয়ব
ছায়াহীন হয়ে রয় মনোসমীক্ষণের বাকি অংশ...

পানাপুকুর জুড়ে ছিল যে অযাচিত কোলাহল
রাজ্যময় ডুবুরী হয়ে আর্তনাদ করে চলে-
পূর্ণিমার পালাগান ক্রমান্বয়ে ডুবে যায়
অমাবস্যার এক পুকুর জলে।

মাঝে মাঝেই ঝিলিক দিয়ে ওঠে শেওলা-পড়া ঘাট
এক ঘটি জল, শুকতারা প্রতীক্ষায়...



নকশিকাঁথার বুকে

তুমি জানো না, কী আগুন জ্বালিয়ে রেখে গেছো তুমি!
অসংখ্য কৃষ্ণচূড়ার বুকে, স্বচ্ছ সরোবরে
বারে বারে ফিরে আসো তুমি বলিষ্ঠ শপথে।

তুমি জেনেছিলে-
একদা এ কুঁজোরা হেঁটেছিল অতীতের পিঠে
শামুকের মতো গুটিগুটি পায়ে
লণ্ডভণ্ড করেছিল হরিণ-বেড়ের বাঁক
সান্ধ্য-মুখোশে আবৃত করেছিল কুয়াকাটার ভোর
আজ আবারও ফিরেছে তারা, সদলবলে
অনাসৃষ্টিতে ভরপুর করেছে এ উর্বরা ভূমি
তাই হ্যামেলিনের বাঁশি হাতে ফিরতে চেয়েছিলে তুমি।

আমি তো টেনিসন নই-
তবুও আঁকবো তোমার কীর্তিগাথা নকশিকাঁথার বুকে
পরাক্রমশালী রাজা আর্থারের বেশে
আজ সৃষ্টির উৎসমূল যা প্রজন্ম-সরোবরে
আমি গুন টেনে পাড়ি দেব তাকে পারমাণবিক মহাসমুদ্রে
ভরদুপুরে, এ তল্লাটে, ও তল্লাটে
মাঠে, ঘাটে, হাটে।

জেনে রেখো, জেগে আছি আমরা
আরও একটি বিষ্ফোরণের অ্যাম্ফিথিয়েটারে
হ্যাজাক আলোতে খুঁজে ফিরছি ভয়ঙ্কর বাইনসকল
টোটাবিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতিতে
তুমি অশরীরি হাল ধরে চলো হে জাগরণ-মাঝি
এ ফুটন্ত সরোবরে-

যদিও বিদায় বলিনি বন্ধু
তবুও বিদায় দেওয়ার তরে-


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন