কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

০৩) বারীন ঘোষাল

অংকবিদের কথা



তোমাকেই বলা ... ... ...

অংক(গণিত)বিদের নাকি অং(অহংমার)কবিদের কথা বলতে নিয়েছি, আজ সেটা খানিক পরেই বোঝা যাবে। আপাতত বলি, সামান্য বিজ্ঞানিকা বা, বিজ্ঞান চেতনা প্রয়োজন আছে কবির, সেই কবির, যার খোঁজ আছে। যে চিরায়তের বাইরে, আবহমান পেরিয়ে খোঁজ করে মানুষের অস্তির সঙ্গে পৃথিবী আর জীবনের সম্পর্ক। বুদ্ধিমান সে। দেখাটাকে বুঝেও নেয়। তাহলে কি আমি সাধারণভাবে কবিদের ভাবনা-পন্থার বিরোধিতা করছি? করিই না হয় একটু ভিলেইনি।

There is nothing called truth, leave alone absolute truth. There is nothing called Absolute. কিন্তু শব্দগুলো এবং তত্ত্ব আর বিশ্বাস বাস করে মানুষের কল্পনায়, ধারণায়। তুমি আবার আমার কথার বিরোধিতা করার জন্য উন্মুখ, আমার কথা মানবে না। কারণ you are a believer having a closed mind. তোমার বিশ্বাস গণিত নিখুঁত ও কঠোর। কিন্তু আমি বলি it is always flexible. তাই তো কালে কালে বৈজ্ঞানিক থিয়োরিগুলো পরিবর্তিত হতে থাকে। এই change effective করে গণিত। আইনস্টাইনের গণিত প্ল্যাঙ্ক এসে বাতিল করে। নিউটন শেষে বাতিল হয়। স্টিফেন হকিং পেনরোজকে বলেন – আমি ভুল, তুমি ঠিক। Bang theory concede করে shadow of mind-এ। গণিত ফ্লেক্সিবল বলেই গাণিতিক দর্শন কালে কালে পালটায়। Statistical mode পালটায়। তুমি কি মনে কর – ISI প্রতিবছর একই গণিত পড়িয়ে যাচ্ছে? No, never. তোমার সুতোর বয়ন, বয়ান, তানাবানা, মাকুপাঠ, রং-গোত্র হামেশা পালটে গেছে গণিত দিয়েই। আমাদের সঙ্গে একটা ছেলে পড়তো, সে maths নিয়ে MA করার সময় তার হস্টেলে গিয়ে দেখতাম, একটা ঢোল কিনেছে, বসে বাজাচ্ছে। সে কোনো বোল তুলছে। আমি গেলেই বলতো – এটা কোন্‌ ইকুয়েশন বলতো, কোন্‌ থিয়োরেম এটা? পারলে কবিরাজি। আমরা অবাক হয়ে সেই ঝালাপালা শুনতাম, কিন্তু বলতে না পেরে কবিরাজি মিস করতাম প্রতিবার। আর তুমি কবি, গণিতকে কঠোর বলছো! জানো না যে রাসেল, ফ্রয়েড তামাদি হয়ে গেছে?



চেতনা থেকে কবিতার জন্ম হয়। কবিতায় চেতনা থাকে না। যা তুমি কবিতা বলে লেখো, তা আসলে কবিতা নয়। কবিতার অনুরূপ অনুভবের প্রকাশ তা, তাই একই কবিতা যুগে যুগে বিভিন্ন সময়ে ভিন্নভাবে প্রকাশিত হয় নানা-কবির হাত দিয়ে। তাকে বলে কবিতালিপি। তা কবিতা নয়। কবিতা কোনো unit নয় যে এক জায়গা থেকে অন্যত্র transfer করা যাবে। প্রকাশ করার পরেও তা কবির মাথায় কখনো জাগ্রত কখনো সুপ্ত থেকে যায়। প্লেটোর সময় কেউ কবিতা লিখতো না, লিখতো verse, যা ছিল তখনকার একমাত্র প্রকাশ পন্থা, যা দিয়ে ইতিহাস ধর্ম দর্শন কাহিনী রাজনীতি সবই লেখা হতো। প্লেটো তাকেই আক্রমণ করেছিলেন, কবিতাকে নয়, কারণ কবিতা কী তিনি জানতেন না। ভারতীয় দর্শনেও সেই অবস্থা। নিজেরা verse-এ লিখে তাকেই condemn করেছেন। বাংলা ‘কবিতা’ শব্দটা সঠিক অর্থে, বর্তমানে প্রচলিত অর্থে প্রথম অনুভূত হয় বিংশ শতাব্দীতে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষে আমরা গদ্য লেখা শিখেছিলাম, thanks to the British. তারপরেই এলো ছাপাখানা। স্মৃতির পাট চুকলো। গদ্যসম্ভব সব কিছু verse থেকে সরে গেল। সেই থেকে পদ্য ধীরে ধীরে বদলে গেল কবিতায়। বিংশ শতাব্দীতে রবীন্দ্রনাথের হাতে প্রাথমিক কবিতা তৈরি হতে থাকে। বাংলার আর ইংল্যান্ডের মাটি আলাদা, রাসেল আর রবীন্দ্রনাথ আলাদা, এটা মেনে নেওয়া ভালো।

তোমার নিজের অটল বিশ্বাসের কথা কি মনে আছে এখনো? থাকলে এইবেলা ভাবো, তুমি ভেবেছিলে গণিতকে কঠোর হতে হবে। না হলে তা formless হয়ে পড়বে। এতে আমি এই বুঝলাম যে, আমি মরে, পুড়ে গেলাম, ছবিতে স্মৃতিতে থেকে গেলাম, তাই আমি formless হয়ে গেলাম। তখন আমার chaos in energy reserve নিয়ে কেউ ভাববে না। এছাড়া, ধরো বরফ বা লোহা গলে গেল, তাতে তো formless হলো না, form change হলো মাত্র। formless বলা যাবে কি film projection-কে, বা witchcraft-এ receptor-কে? না। এমনকি কাল্পনিক ঈশ্বরের মূর্তিরও form হয়। মানুষ কল্পনাতেও চেহারা দ্যাখে। নিরাকার কিছু ভাবতেই পারে না। তাই বেদবাদীরা উপনিষদবাদীদের দূরে সরিয়ে রাখতে পেরেছিল ২০০ বছর আগেও। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রাহ্মরা জেগে উঠলেও অচিরে ঘুমিয়ে পড়েছে। এখনো সেই chaos-কে বিশাল space-এ রাখবে কি? ছোট স্পেস-এ কেঅস বোঝা যায়। বিশাল বিশ্ব-স্পেসে যে কেঅস চলছে, তা বুঝতে আমাদের লক্ষ বছর লাগল কেন? তাও মুষ্টিমেয় কিছু বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ ছাড়া কেউ ভাবে না, বোঝে না তা। তাই বলে তা কি নেই? তোমাকে বলি, in space, even inside of an atomic nucleus 95% space is occupied by quarks, অন্ধকার। তুমি কি টের পাও, ধরো তর্কের খাতিরেও? দেখতে পাও অন্ধকারের আলো? ঐখানে কবিতার মাঠ।


বিজ্ঞানকে সীমাবদ্ধ, কবিতার বাইরে রাখার কথাটা ভ্রান্ত। বিজ্ঞান কোনো জিনিস না, কোনো তর্ক না। বিজ্ঞান একটা tool. সেই টুল ব্যবহারের পন্থা জানেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞান কোনো theory or achievement না। এই টুল দিয়ে আমরা খুঁজি। যে এই টুলটা জানে না বোঝে না, তার কোনো খোঁজ নেই। তার আছে বদ্ধ ধারণা বা বিশ্বাস। সীমাবদ্ধ হয় তা। সে লেখে অমোঘ শব্দ দিয়ে কংক্রিট কবিতা, যার ব্যাখ্যা করা শিখেছি আমরা ছোটবেলায়। ষাটের দশকে এ নিয়ে একটা আন্দোলনই হয়েছিল কংক্রিট কবিতা লেখার। আমাদের সম্পর্কগুলো নিয়ত পরিবর্তনশীল পুঁজিবাদের, ব্যবসার, বিশ্বায়নের চাপে, তা ঠিক। এতে কোনো যুদ্ধ নেই। যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা আছে প্রতিরোধের আর বুলডোজের। তার কার্যবিবরণী দিয়ে গণিতের metric কবিতা লেখা হতে পারে, আমেরিকায় language poetry-তে যা হয়েছে। এদেশে, বাংলায় কেউ কেউ লিখেছেন for a change. আমাদের কাব্যের অর্থ জগত পরম্পরাকে ব্যাখ্যা করা নয়। এই আমরা ‘আমি’ দিয়ে শুরু। সেটা দার্শনিকের কাজ। কবি সেই যুক্তি পেরিয়ে সম্পর্কগুলি আর তার সম্ভাবনাকে দ্যাখে। যা unique but not absolute. এবং সতত পরিবর্তনশীল। সামগ্রিক text বলে কিছু নেই। আসলে text কতগুলো ছাপা শব্দ-সমষ্টি। তাতে কবিতার সামগ্রিকতা বোঝায় না। আর, ঐ যে তুমি ভাবলে – সৃষ্টিকর্তার তেমন ইচ্ছা হয়তো ছিল না – এতে তুমি প্রমাণ করলে যে, you are a believer. এবং সমস্ত আবহমান-বিরোধী কথা blasphemous. অথচ জানলেই না যে, তুমি এই duality বা দ্বান্দ্বিকতা বহন করে কবিতা লিখে চলেছো।

জয় হো আজ শিকল-মুক্ত কবিতার। পরে কহ আর।

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন