কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

০১) অমিতাভ প্রামাণিক

চারানা আটানা



(৬)
শচীন, এবং




নস্ট্রাডামুস, পাগলাবাবা বেঙ্গলি, হনুমান মহারাজ, তন্ত্রসাধক শ্রীশ্রীক্ষ্যাপাবাবা, মাতাহারি দেবী প্রমুখ তাবড় তাবড় ভবিষ্যদ্‌দ্রষ্টার সমস্ত গণনাকে কাঁচকলা দেখিয়ে শচীন অবশেষে অবসর নিল। টেস্ট খেলার সংখ্যায় তার ডবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই ডিক্লেয়ার করে দিল সে। উত্তমকুমার সাড়ে চুয়াত্তর দিয়ে মহানায়ক হওয়ার পথে ওপরের দিকে ওঠা শুরু করেছিল, শচীন মহানায়কের মতো চুয়াত্তর দিয়ে শেষ করল। কলকাতায় ট্রাফিক সিগন্যাল এক বেলার জন্যে পুরো ঘাসের মতো সবুজ করে রাখা যায় কিনা, সেই নিয়ে ভাবনাচিন্তা হতে লাগল দু-নম্বর মহাকরণে, কেননা শচীন যখন শুরু করেছিল, রাজ্যে সেটা ছিল বাম জমানা, অর্থাৎ ট্রাফিক লাইটে লালবাতি জ্বলতো। যতক্ষণ না এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, ততক্ষণ সমস্ত সিগন্যালে গাঁক গাঁক করে বাজতে লাগল দাদুর গান, তোমার হলো শুরু, আমার হল সারা।

নিন্দুকেরা অবশ্য কানাকানি করতে লাগল, শচীনের এই চব্বিশ বছর ধরে খেলা ওর নিজের ক্রেডিট নয়। যার মা-র নামের মধ্যে ‘রজনী’ আর কোচের নামের মধ্যে ‘কান্ত্‌’ আছে, তার কাছে চব্বিশ বছর তো নস্যি! অন্য আর এক দল বলল, ব্যাপারটা বুঝলি না! এমনি এমনি কী আর ছাড়লো, মুখের সামনে টোপ ধরলে ছাড়বে না তো কী! অন্যেরা জিজ্ঞেস করল, কিসের টোপ? নিন্দুকসম্রাট বলল, কিসের আবার, ভারতরত্ন! সলমন খানকে পরমবীর চক্র দে, দেখবি ও-ও সুড়সুড় করে বিয়ের পিঁড়িতে গিয়ে বসবে।



রোহিত শর্মা হাঁফ ছেড়ে জগুবাবুর বাজারে বড় সাইজের রোহিত মৎস্যের অর্ডার প্লেস করল। ভারতীয় টীমে তার জায়গা নিয়ে এখন আর বিশেষ মাথাব্যথা নেই। সামনে সাউথ আফ্রিকায় সিরিজ, বাউন্সি পিচ, ওখানে একের পর এক ধেড়িয়ে এলেও টীমে জায়গা পাকা। অ্যাদ্দিন শচীন ছিল, ঝড়ঝাপ্টা ওর ওপর দিয়ে যেত; পাজী চলে গেল, এখন পাজির পা ঝাড়াগুলো নেত্য করবে যথাতথা।

শচীনের অবসর গ্রহণে ভারতবর্ষের বুকে নেমে এলো হাহাকার। ছাড়া পাওয়া গরুর মতো এক কৃত্রিম উপগ্রহ উঠে গেল ওপরের কক্ষপথে। খনা বলেছিল, মঙ্গলে ঊষা, বুধে পা। কিন্তু দিন বদলে গেছে, এখন মঙ্গলেই পা রাখতে চায় মানুষ, বুধ উইল বি নেক্স্‌ট্‌। ‘শচীন, শচীন’ শুনে কেউ কেউ বলছিল, আরে চীনকে শো করার কিছু নেই, ওরাও স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে, সেটাও অতদূরেই গেছিল, কিন্তু মঙ্গলে পা রাখতে পারে নি। শচীন অবসর নেওয়ার পর ইসরোর সায়েন্টিস্টরা কী সব ক্যালকুলেশন করে কলকাঠি নাড়তেই সেই উপগ্রহ পৃথিবীকে বাই বাই জানিয়ে অষ্টমঙ্গলার মতো মঙ্গলের দিকে চলা শুরু করল। কত লক্ষ কিলোমিটার নাকি চলে গেছে, মানে কনসীভ করে গেছে, আর ন’মাস গেলেই ডেলিভারি করার মতো সেটা মঙ্গলের ফাঁদে জড়িয়ে যাবে।

আলু-পেঁয়াজের দরও আপার অরবিটে উঠে আটকে গেছে, সেখান থেকে আর নামতে চাইছে না। ডলার আর তেলও। সাধারণ মানুষ ডলার দিয়ে ফলার করে না, কিন্তু তেল কিনতে ডলার লাগে। আর তেলের দাম বেড়ে গেলে সব কিছুর দাম বেড়ে যায়। তাই ছাপোষা গরীব মানুষদের আধপেটা খেয়ে থাকতে হয়। যাদের পেটে ভাত জোটে না, তারা আনন্দ করবে কী করে? তখন তাদের এক আধ পিস শচীনের দরকার হয়।

তবে শচীন আর ব্যাট হাতে মাঠে নামবে না। পাকাপাকিভাবেই চলে গেল। যাওয়ার আগে বেশ লম্বা একটা বক্তৃতা দিয়ে গেল। হাটখোলার জগার সেজো পিসে বসে বসে খেলা দেখছিল টিভিতে। ভারত জিতল, শচীন মাইক হাতে লেকচার শুরু করেছে, সেই সময়েই তার পেটটা মোচড় দিয়ে উঠতে গাড়ু নিয়ে নেত্যকালীর মাঠে ছুটতে হলো। ফিরে এসেও দেখে শচীনের বক্তৃতা তখনো চলছে। ক্রিজে যেমন টাইম কাটাতো, মনে হচ্ছে, এখন ক্রিজের বাইরেও সেই রকম পার্ফর্মেন্স দেবে।

হ্যাঁ, শচীনের এখন অনেক কাজ। একে তো সে অলরেডি রাজ্যসভার সদস্য। এখন জনস্বার্থে কেউ কেউ জানতে চাইবে, শচীন ভারতের জাতীয় খেলা হকির জন্য কী করেছে বা অ্যাট লীস্ট কী ভাবছে। এসব প্রশ্নের উত্তর তো সহজ নয়, এর চেয়ে ম্যাকগ্রার গুডলেন্থে কভার ড্রাইভ করা লেস রিস্কি। তবে শচীন ইজ শচীন। শোনা গেল শচীন অলরেডি কাজ শুরু করে দিয়েছে, যাতে এই রকম উল্টোপাল্টা কোশ্চেন করে কেউ তাকে না ঠকাতে পারে।


সেই কাজের প্রথম ধাপ হিসাবে ‘চাক দে ইন্ডিয়া’ সিনেমাটা ও আর অঞ্জলি চোদ্দবার দেখে ফেলেছে। হকিতে ভারতের হৃত গৌরব ফিরে পেতে গেলে হৃতিক রোশনের কৃষ-টাইপের ম্যাজিক চাই, না শাহ্‌রুখ খানের ‘জিন্দেগিকা আখরি থার্টি মিনিট্‌স্‌’-বালা চাক দে, এই নিয়ে ওদের মধ্যে অনেক আলোচনা, দাম্পত্য কলহ মায় বেটাবিটি অর্থাৎ বেটিং পর্যন্ত হয়ে গেছে। শেষে ওদের বেটা আর বেটি দুজনেই বলেছে চাক দে! তাই শচীন ফোনে শাহরুখকে ধরেছে সঙ্গে সঙ্গে। শাহরুখ তখন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডারের কাজ করতে কলকাতায় এসে এক সরকারি অ্যাম্বাসাডার গাড়ির মধ্যে বসে বসে ঘামছিল, গাড়ির এসি চলছিল না বলে। ড্রাইভার এদিক ওদিক তাকিয়ে একটু দিশি ব্র্যান্ডি অফার করতেই খচে মচে করণ জোহরের সিনেমার ডায়লগ দিতে যাচ্ছিল, এমন সময় অটোগ্রাফ শিকারীরা ঘিরে ফেলে গাড়ি থেকে তাকে নামিয়ে নেয়। ওদিকে ঠিক সেই সময়েই এসেছে শচীনের ফোন। ফোনটা রাখা ছিল গাড়ির সীটে, ড্রাইভার ফোন তুলে শচীনের ফ্যাসফেসে গলা শুনে ভাবল, ম্যাডামের ফোন। চাক দে শুনে বুঝে নিল চাকদায় যেতে বলা হচ্ছে, ওখানে আজ কারো মৃত্যুঘন্টা বাজানোর আহ্বানে জনসভা আছে। ম্যাডামের হুকুম, গোল্লায় যাক এসি। শাহরুখকে গাড়িতে ঢুকিয়ে পড়িমড়ি করে চাকদায় নিয়ে গিয়ে তুলল। শচীনও ওদিকে শাহরুখের গলার আওয়াজ কী করে বদলে গেল, সেই নিয়ে অঞ্জলির সঙ্গে আবার বৈঠক করতে বসে গেল।

এদিকে শাহরুখকে বলা হয়েছিল, হাওড়ার নিউ মহাকরণে এসে করণ-অর্জুনের ডায়লগের কিছু মহা অংশ পেশ করে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে এখনো যারা লাল আছে, তাদের নীল করে ফেলতে সাহায্য করতে। কিন্তু টাইম পেরিয়ে যাচ্ছে, তার তো টিকিও দেখা যাচ্ছে না! দিদি আস্তে আস্তে বুঝে ফেলেছে, এই শাহরুখটা পুরো ফালতু, একে দিয়ে কোনো কাজ হবার নয়। যাই বলতে বলা হোক, ও সেই তু হ্যায় ম-ম-মের-রি ক-ক-ক-কিরণ-এ নিয়ে গিয়ে ফেলে। সেদিন দিদিকেও বোধ হয় কিরণ খেরের সাথে গুলিয়ে ফেলছিল। ঐ ছাতার ডায়লগ কদ্দিন চলে! এর চেয়ে বচ্চন মোদির ডেজার্টে অনেক বেশি ফুল ফোটাচ্ছে। মদনের সঙ্গে কনসাল্ট করতে হবে শচীনকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার করলে কেমন হয়। ও ব্যাট হাতে চব্বিশ বছর ক্রিজে কাটিয়েছে বোলারদের ঘোল খাইয়ে, ব্যালটবক্সে ভোটারদের ঘোল খাইয়ে অন্তত তত বছর মহাকরণে কাটানোর পক্ষে ওকে আইডল করাই আইডিয়াল। এর আগেও মাঝে মাঝে এ নিয়ে লাঞ্চ টেবিলে আলোচনা হয়েছে। লোকাল পোস্টার বয় সৌরভকে পাওয়া যাবে না, তার সব কিছুতেই দাদাগিরি, দিদিগিরি সহ্য করতে পারে না সে। বাকি ছিল পোসেনজিত আর সিলিন্ডার, থুড়ি লিয়েন্ডার। কিন্তু ব্র্যান্ড হিসেবে ওদের সে রকম ইয়ে, মানে এক্স ফ্যাক্টর নেই।

মদন-আরাবুল সবাই বলল, হ্যাঁ, শচীন ইজ বেটার। মানে শচীনের আর একটা কাজ বাড়ল। রাজ্যসভার জন্যে দিল্লী যেতে হবে, আবার কলকাতাতেও আসতে হবে পোস্‌চিমবঙ্গের ইমেজ ফেরানোর জন্যে। লাস্ট টেস্টের শেষে ঐ লেকচারটার মতো একটা গরম গরম কিছু নামিয়ে দিলে চাই কী গঙ্গার ধারে দু’কাঠা জমিও মঞ্জুর হয়ে যেতে পারে। প্যানেলিস্ট ডেরেক টাইম্‌স্‌ নাউয়ের নিউজ ইন্টারভিউতে অর্ণবের হাতে নাকানিচুবানি খাচ্ছিল, উপায় না পেয়ে কাঠে পেরেক ঠোকার মতো তুরুপের তাস ছেড়ে দিয়ে জানালো, হ্যাঁ, আমরা শচীনকে আনছি। ওয়েস্ট বেঙ্গলে এবার ফরেন ইনভেস্টমেন্টে জোয়ার আসবে। অলরেডি সিঙ্গুরে পৃথিবীর বৃহত্তম সিঙ্গাড়ার ফ্যাক্টরি খোলা হবে বলে একটা টেন্ডারের খসড়া রেডি করে ফেলেছেন বিত্তমন্ত্রী, সেখানে ইনভেস্ট করবে পৃথিবীর নাম্বার ওয়ান বিশ্ববিদ্যালয় পাঞ্জাবের লাভলি প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটির মালিক। সুনীতা উইলিয়াম্‌স্‌ স্পেসে সামোসা নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই এই আইডিয়া তার মাথার মধ্যে ঘুরছে। শোনা যাচ্ছে, ম্যাকডোনাল্ড্‌স্‌ও ম্যাক-সিঙাড়া ছাড়ছে বাজারে, আর কে এফ সি ওদের আগের নাম চেঞ্জ করে কলকাতা ফাস্টফুড সেন্টার বানিয়ে ফেলবে কিনা ভাবছে। শচীনকে দিয়ে বলানো হবে, তার প্রত্যেকটি ইন্টারন্যাশনাল সেঞ্চুরির আগের দিন রাত্রে সে আধখানা করে সিঙাড়া খেয়েছিল, অন্যান্যবার মেনুতে সিঙাড়া ছিল না, তাই সেঞ্চুরিও ফস্কে গেছে।

খেলাধূলার উন্নতিকল্পে কোথায় কী করা যায়, এর জন্যে প্রখ্যাত ক্রীড়ামোদি লেখক মতি নন্দীকে মহাকরণে তুলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় তিনি নন্দীগ্রামে হাডুডু কোচিং সেন্টার খোলার কথা বলেন। এতে বিজেপি প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়ে বিবৃতি দিয়েছে, শ্রীনরেন্দ্র মোদির পেটেন্টেড রীতি ফলো করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার শ্রীমতি নন্দীকে নিযুক্ত করেছে। এদিকে শ্রীমতি নন্দী কে, সেই নিয়ে জনগণের মধ্যে মহা বিভ্রান্তি শুরু হয়েছে। নন্দী পদবীর কোন্‌ মহিলার সাথে খেলাধূলার ব্যাপারে আলোচনা করা হচ্ছে?

এদিকে সাউথ আফ্রিকায় ভারত খেলতে আসছে, সেই টীমে শচীন খেলবে না, কেননা সে এখন ভারতরত্ন, এই শুনে সে দেশের ভারতরত্ন ভাবল, আর বেঁচে থেকে লাভ কী! সবই মায়া। তার দেহান্তের খবর পেয়ে তড়িঘড়ি প্রধানমন্ত্রী ছোটে গান্ধীকে ডেকে বললেন, রাহুলবাবা, একটা বিবৃতি লিখে আমার নামে পাঠিয়ে দাও বাবা। আমি যদি এখন মুখ খুলতে যাই, লোকে বলবে, শচীন অবসর নিয়েছে বলেই দেখাদেখি আমিও...

পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও ইন্ড্রাস্ট্রিয়ালিস্টদের হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে শচীনকে ক্যাশ করার জন্যে। শচীন যে পার্মানেন্টলি মাঠ ছাড়ার আগে পিচে গিয়ে প্রণাম করে এলো, তাই দেখে বিড়লারা ট্র্যাডিশনাল হিন্দুমন্দিরের বদলে পিচমন্দির, আর রিয়েল এস্টেটের ব্যবসাদার হীরানন্দনি গ্রুপ তাদের ডেভেলপ করা সমস্ত কমপ্লেক্সে শচীনবেদি বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় কমার্স মিনিস্টার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে অবসর নেওয়া কর্মচারিদের শচীনের মতো বিদায়ী ভাষণ দেওয়া বাধ্যতামূলক করার মর্মে এক বিল আনতে চলেছে পার্লামেন্টের পরবর্তী অধিবেশনে।

প্রখ্যাত হাফ পঞ্জিকার জনক বেণীমাধব শীলের লাল মলাটের বইয়ের পরবর্তী সংস্করণে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে, দিনে যে চব্বিশটা ঘন্টা, সেটা শচীনের ক্রিকেট জীবনের এক একটা বছরের মতো স্মরণীয় করে রাখতে প্রত্যেক যুবক-যুবতীর শক্তিবর্ধক গোলি খাওয়া উচিত। এ ব্যাপারে মন্ত্রপূতঃ তাবিজ পাওয়া যাবে মাত্র ছশো টাকা থেকে। তেল, মাদুলি, কবচকুন্ডলি এটসেট্রা কমপ্লিমেন্টারি, তবে ভ্যাট অতিরিক্ত। বাংলা বছরেরও আর বেশি বাকি নেই, এ সময় জেনেরালি পাঁজি ফাঁজি বিশেষ বিক্রি হয় না, কিন্তু শচীনের জন্যেই এবার হাফ পঞ্জিকা এখন হঠাৎ হৈ হৈ করে বিক্রী হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ক্যালেন্ডারমন্ত্রী এ বছর থেকে শচীনাব্দ চালু করা যায় কিনা, এই নিয়ে ইন্ডিয়ান ইন্সট্যুট অফ অ্যাস্ট্রোনমির সায়েন্টিস্টদের সাথে আলোচনা করছেন।

কলকাতা শচীনজ্বরে ভুগছে। নজরুলের জন্মদিনে নজরুল মঞ্চে যেমন ইয়াং রবি ঠাকুরের ছবিতে মালা পরিয়ে সবাই আহা-উহু করেছিল, বোম্বে গিয়ে শচীনকে ধরে আনতে গিয়ে মদনের সাঙ্গোপাঙ্গরা বেঁধে নিয়ে এসেছে তার মতোই দেখতে এক মারাঠি ছেলেকে। সে হিন্দী ফিল্মে এক্সট্রা, মানে পঁচিশ পঞ্চাশ টাকা পেলে ভিড়ের মধ্যে ডান্স করে। হোটেলে মহাকরণ থেকে নির্দেশ গেছিল, শচীনের স্ত্রীর ওপর বিশেষ সম্মানার্থে সে হোটেলে নিজের রুমে পদার্পণ করার সঙ্গে সঙ্গে যেন তার ঘরে ‘অঞ্জলি লহ মোর সঙ্গীতে’ ‘রবীন্দ্রসঙ্গীত’টি বাজতে থাকে। সেই রকমই হয়েছে, তবে নকল শচীন তা অ্যাপ্রিশিয়েট না করে মাঝপথেই সেটা বন্ধ করে দিয়ে লুঙ্গিডান্স চালিয়ে দিয়েছে। তাজ বেঙ্গলে মহা আরামে সে এক বিশাল স্যুট নিয়ে আছে আর দু’বেলা পাওভাজি বড়া- পাও সাঁটাচ্ছে। সৌরভ শচীনের আসার খবর পেয়ে ডোনাকে সঙ্গে নিয়ে তাজে দেখা করতে গেছিল, ব্যাপার স্যাপার দেখে সে তো মহা আনন্দ পেয়েছে। দাদাগিরিতে প্রত্যেক দিন এই ঘটনা নিয়ে নতুন নতুন গুগলি বানাতে আরম্ভ করে দিয়েছে সে। এম এল এ স্পেশাল শোতে এই গুগলি খাইয়ে টি-আর-পি নাকি আকাশে তুলে ফেলেছে।

তবে সৌরভকেও আজ আর সাধু বলার রিস্ক নিতে যাবেন না। বললে তার মানে হবে আপনি চোর। রবি ঠাকুরের দুই বিঘা জমি-র লাস্ট লাইনটা মনে নেই?

1 কমেন্টস্: