কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০১৪

০৫) কাজল সেন

নীল সন্ন্যাসী

তুমি চোখ মেলে দেখেছিলে তোমার প্রথম জন্মোৎসব
প্রদীপ জ্বালানো হয়েছিল ঘরে
পান পাতার ওপর সুপুরি
কয়েকটা হরিণশিশু তোমার চোখের ওপর রেখেছিল
হরিণচোখ

তুমি এভাবেই দেখেছিলে তোমার দ্বিতীয় জন্ম তৃতীয় জন্ম
তীর্যক রোদ এসে প্রতিবারই এঁকেছিল জন্মছক
তুমি জন্মদাগের সন্ধানে ব্যস্ত ছিলে সারাক্ষণ
জন্মদাগ কি এভাবেই বদলে যায় বারবার

তোমার ভ্রমণসূচি যেভাবে নির্দ্ধারিত হয়েছিল
যেসব বাগানে ছিল তোমার শিকড় ছড়ানোর আমন্ত্রণ
ঘরোয়া বাতাস ছাপিয়ে যতটা নদী সুবর্ণরেখা
চৌকাঠ পেরিয়ে গড়িয়ে আসা জন্ম জন্মান্তরের জল

ব্যক্তিগত দালানের মধ্যমণি হয়ে
আমি তখন ছিলাম নীল সন্ন্যাসীর ভূমিকায়
তোমার চতুর্থ জন্মোৎসবে



এই নির্জনতায়

আরও একটু নির্জনতা সামলে উঠে
এখানে বসবাস করা হয়তো যাবে একদিন
তখন দরজায় লাগানো হবে কি রঙের পালক
আর দক্ষিণ দেওয়ালের জানালায় কোন্‌ লতাগাছ

অথচ একটা উটকো ধড়িবাজ কাঁচা ঘুম থেকে উঠে
সদর রাস্তার মোড়ে চটপট বসিয়ে দিল নামের ফলক
সেই ফলকে ছিল না আমার নাম

নির্জনতা আরও ছিল প্রশস্ত বিছানায়
ডোরাকাটা চাদর বেয়ে উঠে এসেছিল পাকা ধানের শীষ
আলিঙ্গনের অজুহাতে পানপাতা সাজিয়েছিল তোমার মুখ
ধারাপাত বেয়ে তখন অনেক অরণ্য অনেক বাহার
অনেকটা রোদের বাহার

বসবাস করা হয়তো যাবে একদিন এখানেও
যখন আরও একটু নির্জনতা সামলে উঠে
টেক্কা হবে আমার হাতের তাস
আর তুমি হবে তোমার চর্চিত মুদ্রাদোষে
রঙের গোলাম

যদিও সদর রাস্তার মোড়ে বসানো হয়েছিল যে নামের ফলক
সেই ফলকে ছিল না তোমারও নাম


1 কমেন্টস্:

  1. কাজল দা দুটি কবিতায়ই অসাধারন লাগলো।

    কত কঠিন কথাকে কত সাবলীল আর সহজ ভাবে বলা যায়, যা আপনার কাছে শীক্ষনীয়।
    " জন্মদাগ কি এভাবেই বদলে যায় বারবার " - সত্যি যত খানি দাগ থেকে যায় তাও পরিবর্তিত হতে থাকে জন্মা জন্মান্তর এর ক্ষণ পথে। এই পথ ভ্রমনের। আমরা ঘুরতে থাকি চৌকাঠ থেকে চৌকাঠে ভিন্ন ভিন্ন রূপে।

    'নির্জনতা আরও ছিল প্রশস্ত বিছানায়
    ডোরাকাটা চাদর বেয়ে উঠে এসেছিল পাকা ধানের শীষ " - এই ভাবেই নির্জনতার সাথে সহবাসে ব্যস্ত আমরা।

    "যখন আরও একটু নির্জনতা সামলে উঠে
    টেক্কা হবে আমার হাতের তাস " কতটা গভীর!!!

    উত্তরমুছুন