কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০১৪

০৫) অলোকপর্ণা


গরিব

চাঁদের আলোয় হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছে মানুষটা হাত দেখছে, না আলো, বোঝা যাচ্ছে না।
দূরে একটা শিয়াল ডেকে উঠতে মানুষটা আবার হাঁটতে শুরু করে। চাঁদের আলোয় জেগে বসে আছে রাস্তা। সে ভাবে, এমন রাতে কারেন্ট সাপ্লাই বন্ধ করে দেওয়া উচিত। চাঁদের জন্য এটুকু অন্তত আমরা করতেই পারি!  


মোড় ঘুরতেই ল্যাম্পপোস্ট। বিরক্ত হয়ে সে জ্বলন্ত বাল্বের দিকে তাকায়। যেন এর চেয়ে অপ্রয়োজনীয় কিচ্ছু হয় না আজকে। আশপাশের মাটিতে ঝুঁকে ঢিল খুঁজতে থাকে সে। আর ভাবে, মানুষ কত অবান্তর কাজই না করে!... করতে  থাকে। এই যেমন ছোট পাথরের নাম ঢিল,... চাঁদের আলোর নাম রাখা জ্যোৎস্না... দুবারের চেষ্টায় লাইট বাল্বটা ভেঙ্গে ফেলে সে। সাথে সাথে জ্যোৎস্না  চারদিকে লাফিয়ে পড়ে। আর তখনই একটা বাইক এসে দাঁড়ায় মানুষটার পাশে।

বের কর যা যা আছে
মানুষটার আপশোস হয় লাইট বাল্বটার জন্য। একে একে পকেট থেকে ওয়ালেট, হাত থেকে ঘড়ি, গলা থেকে চেইন বেরিয়ে আসে। সব বেছে নিয়ে নির্বিবাদে বাইক চলে যায়। মানুষটা বোঝে, বাইক আরোহীও জ্যোৎস্না প্রেমিক, হেড  লাইট বন্ধ করে বাইক চালাচ্ছে।


সর্বস্ব খুঁইয়ে মানুষটা গরিব সাদা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে।  
কোন্‌ রাতের পাখি হঠাৎ ডেকে উঠলে সে আকাশে
র দিকে তাকায় আর দেখে - একটা ঘুড়ি উড়ছে।
পত পত করে হাওয়ায় উড়ছে ঘুড়িটা। জ্যোৎস্নায় ঘুড়ি ওড়াচ্ছে আরো কোনো এক গরিব মানুষ, দিনের আলো কেনার মতো সাধারণ শখও যার নেই।
মানুষটা ঘুড়ির রোম্যান্টিক উড়ান দেখে অনেকক্ষণ। তারপর চাঁদের আলোয় হাত পেতে ধরে হাত দেখে... বা আলো। চাঁদের
মতো পক্ষপাতহীন কিছু হয়  না। চৌদ্দ টুকরো হয়ে গিয়েও সেই আলো দিয়ে কী করে সে মাস চালায়, কে  জানে! চাঁদের মতো গরিবও বোধহয় কেউ নেই।
নিজের হাতে বা আলোর দিকে তাকিয়ে তার খেয়াল হয়
, বাইক আরোহী হাত  থেকে এই আলো নিয়ে যেতে ভুলে গেছে।
মানুষটা চলে যাওয়া রাস্তার দিকে তাকায়, সাদা হয়ে জেগে বসে আছে রাস্তা।
বাইক আরোহীর জন্য তার আ
পশোস হয়।

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন