কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৪

২১) স্রোতস্বিনী চট্টোপাধ্যায়


স্রোতস্বিনী চট্টোপাধ্যায়



১১ই নভেম্বর      

এখন আর আমাদের আগের মতো দেখা হয় না অনি,  
এই সেদিন
যেদিন অনেকদিন পর দেখা হলো  
সেইদিনই প্রথম মনে হলো  
দিনগত অবজ্ঞা থেকে একদিনের প্রশ্রয়ে  
কোনও ওপর দেখানো নেই
বরং ফিরে আসার রসিকতা আছে -

এই সেদিন  
যেদিন অনেকদিন পর দেখা হলো  
সেইদিনই প্রথম মনে হলো  
আমাদের মাঝখান দিয়ে স্বর্গ ছোঁয়া সিঁড়ি উঠে গেছে,  
সেই সিঁড়ির মুখ ঘোরানো না গেলেও  
প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে অল্প তেলে প্রদীপ জ্বালালে
এখনও আহ্লাদের মতো দেখতে লাগে -  

এখন আর আমাদের আগের মতো
দেখা হয় না ঠিকই,
(মোদ্দা কথাটা হলো)
এই সেদিন  
যেদিন সত্যিই অনেকদিন পর আমাদের দেখা হলো  
অনি, তোমায় ছেড়ে আসতে কিন্তু বেশ কষ্ট হচ্ছিল...




স্বীকারোক্তি

ঘর ভাঙ্গার পর
সম্পর্ক ঘূর্ণি হয়ে ওঠে

একটু একটু করে গতি বাড়ে
নাগরিক বোঝাপড়া পেছতে পেছতে
গতি কমেও আসে

তখনই চেনা চেনা লাগে সব,

ভিন্টেজ ওয়াইনের মতো অতীত  
ছুটন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে স্লাইড শো–এর মতো  
পেরিয়ে যায়

আমি দেখতে পাই
থুতনিতে হাত রেখে কেউ একজন
হেমন্তের আদিম নিঃশ্বাস লিখে যাচ্ছে ক্রমাগত

কেননা অন্যদিকে প্রতিদিন নতুন করে ব্যক্তির মতো গত হচ্ছে
আমাদের ফিরে আসা

ফিরে...
ফিরে আসা...



স্বাদ

  
মুখোমুখি নয়
যখন আমাদের দেখা হয়
তখন শুধু রাত্রি জানে
আমি কীভাবে তোমায় প্রাক্তন প্রতিশ্রুতির মতো ফিরে পেতে চাই  

একটার পর একটা সুখস্মৃতি বাতিল করতে করতে মনে করি  
যদি বাগানের শা কোণে  
কোনও মরা গাছ আবার নতুন করে বেঁচে ওঠে
যদি আবার কোনও লাশ মাথা তোলে ছাই চাপা আগুন থেকে
আমি সমস্ত মরীচিকার পথ ভুল করে দিয়ে   
                        ওদের গায়ে ঢেউ ছিটিয়ে দেব -

ভালোবাসার থেকে বহুদূরে পালাতে চেয়েও
নির্বিবাদী পাথরের জন্য             
শিবরাত্রি থেকে লক্ষ্মীপুজো প্রতিটি দেব দেবীর জন্য আমি উপোষ করেছি

শুধু তোমায় ফিরে পাওয়ার ক্ষমতা প্রসাদ হিসেবেও কোথাও খুঁজে পাইনি

তাই আজ মুখোমুখি না হয়েও  
সত্যি কথা বলতে কি
একবার অন্তত বলির মাংসের স্বাদ পেতে ইচ্ছে করছে



আমাদের বৃষ্টিবাদী সম্পর্কের শেষে 

আমার সাথে তোমার তফাৎ অনেকখানি জেনেও
অসময়ে বৃষ্টি এলে তোমার কি একবারও আমার কথা মনে পড়ে না অনি?

যখন বজ্রপাতের ফিসফিসানি উঁকি দেয় আকাশের ফাঁক থেকে
তখন ধুলো ঝড়ের ঘনিষ্ঠতায় আমি নিজেকে ভাসিয়েছি
তোমারই আধভাঙ্গা নির্জন আগুনে

ইতিহাস বুড়ো হয়ে জমা জলে ভেসে আমার কোনও খবর
তোমার কাছে পাঠায়নি, আমি জানি

তবু  
বিদ্যুতের শেষ রেখা থেকে তোমায় কাছে ডাকছি
মেঘের দিকে ঝুলে পড়া সাবধানি বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে
তোমায় বোঝাতে চাইছি
‘তুমি ফিরে যাও’ কথাটা বলা নেহাতই ছেলেমানুষি ছাড়া আর কিছুই নয়!  














   

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন