কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

বব ডিলন

প্রতিবেশী সাহিত্য


বব ডিলনের কবিতা         

 

(অনুবাদ : বিতস্তা ঘোষাল


  


কবি পরিচিতিঃ  

বব ডিলন (জন্মগত নাম রবার্ট অ্যালেন জিমারম্যান, ২৪ মে, ১৯৪১) একজন সুবিখ্যাত  গায়ক, গীতিকার, সুরকার, ডিস্ক জকি; এবং সেইসঙ্গে  কবি, লেখক চিত্রকর, যিনি ১৯৬০- এর দশক থেকে পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে জনপ্রিয় ধারার মার্কি সঙ্গীতের অন্যতম প্রধান  পুরুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ডিলানের শ্রেষ্ঠ কাজের মধ্যে অনেকগুলো ১৯৬০ দশকে রচিত হয়েছে এসময় তিনি আমেরিকান অস্থিরতার প্রতীক বিবেচিত হতেন তাঁ কিছু গান, যেমন Blowin' in the Wind The Times They Are a-Changin' যুদ্ধবিরোধী জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং  ১৯৫৫-১৯৬৮ সালের আমেরিকান নাগরিক অধিকার আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে তাঁর সর্বশেষ অ্যালবা Christmas In The Heart মুক্তি পেয়েছে ২০০৯ সালে   রোলিং স্টোন ম্যাগাজিন একে পরবর্তীকালে বর্ষসেরা  অ্যালবাম হিসেবে সম্মানিত করেছে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ১৩ অক্টোবর সুইডিশ একাডেমী তাঁকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করে তিনিই পৃথিবীর প্রথম গীতিকার যিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন অদ্যাবধি তাঁর বিক্রিত রেকর্ডের সংখ্যা ১০ কোটিরও বেশি

 
জাস্ট লাইক অ্যা উওম্যান (মেয়েটির মতো)

ব্যথা বেদনার ছিটেফোঁটা নেই কোথাও
রয়েছি সড়কে একলা দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিড় উধাও
ঘরে-ফেরা বাবু অপাঙ্গে দেখে লাস্যময়ী মেয়েকে
নিয়নবাতির গা ঘেঁষে ডাকছে সে লেলিহান সন্ধ্যাকে
আমি দেখি তার ভিজে  চুলে শেষ বিকালের মায়া
আমি দেখি তার গোটা শরীরে গাঢ় ক্লান্তির ছায়া

তার কাছে গিয়ে পুরুষেরা পায় পেশাদারী মনোভাব
অঙ্গে অঙ্গ গ্রহণে নিখুঁত সুঠাম নারীর ছাপ
প্রণয়কেলির সময়েও সে কামাতুর নারীরই মতো
রভসে গোঙায় শীৎকারী যায় শৃঙ্গারসম্মত
সবকিছু যেন অভিজ্ঞ হাতে রমণীয় ঢঙে সামলায়
ব্যথা পেয়ে শুধু ফোঁপায় যখনই বাচ্চাটা বোঝা যায়

সাবিত্রীবালা নামের মেয়েটা আমার বন্ধু হয়
বৃষ্টিজীর্ণ রাতে আমাকে সে দিয়েছিল আশ্রয়
ভাবতে হবে না আপনাদের সাত পাঁচ মশাই
ঈশ্বর তাকে দেবে না আদৌ নন্দনকাননে ঠাঁই
যদিও মুখে বলে না সে, মনে মনে ঠিকই জানে
রামবুজরুকি সীতাধারণায় মোহগ্রস্ত দুনিয়াটা এইখানে
কেউ স্বীকৃত মহিয়সী কেউ মহাধিক্কৃত পাতকী
বোকাবোকা এমন কৌতুকে হেসে কুটিকুটি বিশ্বব্যাপিয়া জানকী

তার কাছে গিয়ে পুরুষেরা পায় পেশাদারী মনোভাব
অঙ্গে অঙ্গ গ্রহণে নিখুঁত সুঠাম নারীর ছাপ
প্রণয়কেলির সময়েও সে কামাতুর নারীরই মতো
রভসে গোঙায় শীৎকারী যায় শৃঙ্গারসম্মত
সবকিছু যেন অভিজ্ঞ হাতে রমণীয় ঢঙে সামলায়
ব্যথা পেয়ে শুধু ফোঁপায় যখনই বাচ্চাটা বোঝা যায়

সেদিন বিকেল থেকেই আকাশভাঙা বৃষ্টি এসেছিল শহরে
ভেসে গেছিল গলি-উপগলি আমারই মতোই ক্লিষ্ট করুণ জ্বরে
এককোণে দেখি  তুমি ভেজা গায়ে একা দাঁড়িয়ে
শতবছরের শূল বয়ে যেন জিরিয়ে নিচ্ছ পথবাতিটির গায়ে
পায়ে পায়ে যাই তোমার ছায়ায় দেবশিশুটির মতো
অবিকল তুমি বিনুনিব্যাকুল, সোনামুখটুকু অভিমানে বিব্রত
ঘরেতে তোমার নিয়ে গেলে এত সযতন সস্নেহে
পেয়ে গেছ যেন খেলারর সঙ্গী  এই দেহে
কেঁপে উঠি আমি অপত্য প্রেমে, কেঁপে উঠি বেদনায়
ঝেঁপে আসে জ্বর রোদনভরা সুরের কবিতায়
বুঝতে পারনি তৃষ্ণা আমার না-মিটিবে এই সবিতায়
এই বিনুনিতে একটি জীবন রইবে মগ্ন নিদ্রাহীন খোয়াবে
সেই থেকে আমি চণ্ডালচোখে শ্মশানের মতো লোকালয়ে ঘুরে ফিরি-
সাবিত্রীহীন সন্ধ্যাবাতাসে টের পাই তাকে শান্ত ঝিরিঝিরি
দ্যাখো সাবিত্রী তিষ্ঠোতে আমি পারছি না এইখানে
একটু দুজনে জিরোই এসো অহেতুর এই গানে
দ্যাখো সাবিত্রী শান্তি আসলে দণ্ড দুইয়েরই তরে
যেখানেই থাকি নাটোরে কিংবা
আটলান্টিকতীরের বিভূঁই নিউইয়র্ক মহানগরে
-জন্মে আর তোমার-আমার রেলগাড়ি ভিড়ল না
বৃষ্টিজলেই যায় ভেসে যায় আদরের নাওখানা
আবার যখন পরজনমে দেখা হবে আমাদের
হাতে নেব হাত শর্তমুক্ত বন্ধু পরস্পরের
পুরনো ঝড়ের রাতটার স্মৃতিচারণ কোরো না দোহাই
যে-রাতে একটি নিরাশ্রয়েরে তুমি দিয়েছিলে অন্ন জল, মাথা গোঁজার ঠাঁই
তোমার ভুবনে দিয়েছিলে আমায় মানুষের অধিকার
আমি পারি নি তোমাকে দিতে আমার ভুবনে যেটুকু প্রাপ্য তোমার

তার কাছে গিয়ে পুরুষেরা পায় পেশাদারী মনোভাব
অঙ্গে অঙ্গ গ্রহণে নিখুঁত সুঠাম নারীর ছাপ
প্রণয়কেলির সময়েও সে কামাতুর নারীরই মতো
রভসে গোঙায় শীৎকারী যায় শৃঙ্গারসম্মত
সবকিছু যেন অভিজ্ঞ হাতে রমণীয় ঢঙে সামলায়
ব্যথা পেয়ে শুধু ফোঁপায় যখনই বাচ্চাটা বোঝা যায়



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন