কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

শুভ আঢ্য

ব্ল্যাকশিপ


(১১)

তাপমাত্রা আসলে প্রতিটা ভেড়ার সমান্তরালে নেমে যায়
তাদের চিৎকার যে সমস্ত তাপমাত্রায় জমাট বাঁধে
তার কথাই লেখে মেয়েটি, আর দেখে সেখান থেকে
একটার পর একটা ভেড়া খাদের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ছে
আর উঠতে পারছে না তাদের ছায়াও
মেয়েটি দেখে প্রতিটা ভেড়ার মধ্যে অপর ভেড়ার প্রতি
সমান্তরাল ভালবাসা যেমন আছে, ততটা ঘৃণাও তারা
মুখে মুখ দিয়ে স্থানান্তর করে, মেয়েটি কাছে গেলে তা
তরান্বিত হয় আদপেই... তাপমাত্রা প্রতিটা ভেড়ার সমান্তরালে
খাদের দিকে নামলে তাকে সূচিত করার কোনো
অন্তর্নিহিত অর্থ নেই, যদিও সেখানেই ছায়াগুলো
জমাট বাঁধে আর মেয়েটি অভ্যস্ত হাতে আলো নিভিয়ে দেয়

(১২)

ভেড়াগুলো খামারবাড়ির ভেতরে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে
তারা মেয়েটির বামদিক থেকে খুবলে খায় হৃদপিণ্ড
প্রকাণ্ড শীতের দিনে ভেড়াগুলো খুব নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে
মেয়েটির হাতের ওপরে তারা মাংস সাজিয়ে দেয় তাদের
আর দেখে উলকাঁটা থেকে তাদের ভবিষ্যৎ জন্ম নিচ্ছে

ভেড়াগুলো ফুলের মত তাদের চোখে দেখে প্রতিচ্ছবি থেকে
ধারালো হচ্ছে ছুরি, তাদের ডাক বন্ধ হচ্ছে, তারা আদপেই ঘাস থেকে
নেমে আসছে ড্রইং খাতায়, তারা জমে উঠছে মেয়েটির বুনে চলা
পুলওভারের ওপর, আর জানছে অন্য জঙ্গলে ওঠার রাস্তা কোনো

ভেড়াগুলো নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে খুব, তারা হৃদপিণ্ডের দিকের
তফাৎ পারে না করতে আর, শুধু দেখে রাইম্স বইয়ে
খোদাই হচ্ছে তারা এবং ঘুমোতে পারছে না, খেতে পারছে না...
মেয়েটিও বন্ধ করে উঠে পড়ছে ওই রাইম্স বই

(১৩)

অন্ত্রের ভেতরে ডেকে ওঠে তারা, মেয়েটির পাকস্থলীতে
গাঢ় রসের উৎসেচকে তারা থাকতে পারে না, এই স্পাইস
তাদের চোখ ও নাকে বসে, ভেড়াগুলো আকাশের কাছে
দেখে তাদের শুকোতে দেওয়া হয় দিনের বেলা, রাতের বেলা
তাদের ওপরে সসের আস্তর পড়ে, আর তারা টেবিলের ওপরে
ওয়াইনের পাশে এগিয়ে যায় আরও

তারা অবিবেচকের মত ডেকে ওঠে, অন্ত্রের মাঝামাঝি শিরা
ভেদ করে ডেকে ওঠে ফায়ারপ্লেসের সামনে, পশমহীন তারা
কুঁকড়ে ওঠে বরফে আর ডাকা থামিয়ে দেয়, শুধু মেয়েটি
শুনতে পায় অন্ত্রের ভেতরে শিরা ভেদ করে তারা বলে উঠছে
একটু উষ্ণতার অভাবে চোখ তাদের ধূসর হয়ে যাচ্ছে
আর রাসায়নিক বিক্রিয়ার মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে তারা

(১৪)

শেষ যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ভেড়াগুলো স্তেপের ওপরে জলের ধারে
ছায়ার মতো পড়ে থাকে কেবল, পোকাগুলো বসে এবং
মেশিন উইভিং-য়ের মতো নিজেদের ছড়িয়ে দেয় তাদের ভেতরে
মেয়েটি দেখে একটা কালো ভেড়া শান্ততার যাবতীয় উপকরণ নিয়ে
মাটির দিকে তাকায়, তারা নীচের মাটিকে ওপরে তোলে যেমন
ওপরের মাটিকেও পাঠায় ওই নীচেই, তারা কেবলই
পশম বলের মত চলচ্ছক্তিহীন পড়ে থাকে

যুদ্ধের ওপারে মেয়েটিও পোকার কবল থেকে উদ্ধার আর করতে
পারে না, দেখে রঙিন আকাশের নীচে থোকা থোকা পোকা
শেষ পশম থেকে ভেঙে ফেলছে তাদের, এই শীতের সাথে
মিশিয়ে দিচ্ছে তাদের যাবতীয় ওম, অথচ তারা নিরুদ্দিষ্ট চেয়ে আছে
মেয়েটির দিকে অথবা শেষ যুদ্ধের ভুল প্রস্তুতির দিকেই চেয়ে আছে...
পরম উষ্ণতার দিকে পশমহীন চেয়ে আছে কেবল


1 কমেন্টস্: