কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০১৭

বিতস্তা ঘোষাল

অমরত্ব আর আমি


(১)

তুমি কি কেবলই একটা ভ্রমের সৃষ্টি? নাকি তুমিই সৃষ্টি করো ভ্রম? তুমি কি এই শরীরের একটা অংশ? নাকি শরীরটা তোমারই একটা অংশ? এই ঘরের ভেতরেই কি শূন্যতা বিরাজমান? নাকি শূন্যতায় বিরাজ করে এই ঘর? নাকি ঘর আর শূন্যতা  দুটোরই অস্তিত্ব শুধু চোখের দৃষ্টিতে? চোখটা কি মনের ভেতরে থাকে? নাকি মনটা এই চোখের ভেতর? নাকি মন?

(২)

কোনো রং তুলির আঁকিবুঁকি নয়, যা আছে সেটাই থাক। পাখিরা আকাশ থেকে নেমে এসে গান শোনাচ্ছেগভীর জলধারার মাঝে জন্ম নিচ্ছে নতুন প্রাণ। প্রকৃতির মুক্ত মঞ্চে অভিনীত হতে চলেছে এক সদ্য লেখা নাটক নাটকের নাম ‘আমরা’নাটকের যতই গভীরে যাই না কেন খুঁজে পাচ্ছি না আমার আমিকে

(৩)

আমার ভয় হয় একটা শরীরের অধিকারী হতে ভয় করে একটা আত্মার ভার নিতেও  অগাধ বিপদজনক সম্পত্তি মালিকানা ঐচ্ছিক নয় জোড়া সম্পদ লিখে দেয়া হয়েছে একজন সন্দেহাতীত উত্তরাধিকারের ভোগে একজন যোগী, অমরত্বের একটা মুহূর্ত এবং ঈশ্বর - সবাই দাঁড়িয়ে একই সীমান্তে।

(৪)

আমি জানি আমি গুপ্তধন খুঁজছিলাম পুকুরের স্বচ্ছ জলে যখন তোমার মুখ তোমার মুখটি যেন কুয়োয় প্রতিফলিত চাঁদ। যেখানে আমার ইচ্ছেযেখানে  তোমার চুমুর হিমশীতল অগ্নিছোঁয়া, শুধু আমার ঠোঁটের জলে যেখানে তোমার মুখযেখানে তোমার মুখের ছবির প্রতিফলিত, প্রাণবন্ত... সেখানে নয়, যখন আমি পেছন ফিরে দেখি শূন্য হাওয়া সেইখানে তুমি এসো

(৫)

তোমাকে ভালোবাসার আগে, কিছুই ছিলো না আমার আমি ঘুরে বেরিয়েছি রাস্তায়, জিনিসপত্রের মাঝখানে। সবই ছিলো অর্থহীন অথবা নামহীন। পুরো পৃথিবীটা ছিলো ফাঁকা, অপেক্ষারত। আমি দেখেছি ছাইয়ে ঠাসা ঘরগুলো, দেখেছি সুড়ঙ্গের সারিগুলো  যেখানে ছিলো চাঁদের আবাস, দেখেছি অভব্য গুদাম ঘর, যে ঘর চিৎকার করে বলে  উঠে বের হও’, দেখেছি বালির মধ্যে প্রশ্নের জোরাজুরি। সবকিছুই তোমাকে ভালোবাসার আগে
  
(৬)

আমি তোমার নাম দিয়েছি বিশুদ্ধ প্রেম তোমার চেয়েও দীর্ঘদেহী কেউ আছে, আরও দীর্ঘ। তোমার চেয়েও বিশুদ্ধ কেউ আছে, আরও বিশুদ্ধ। তোমার চেয়েও প্রাণবন্ত কেউ আছে, আরও প্রাণবন্ত। কিন্তু তুমিই আমার বিশুদ্ধ প্রেম যখন তুমি হেঁটে বেড়াও রাস্তাগুলোতে কেউ চিনতে পারে না তোমাকে। দেখতে পায় না কেউ তোমার মাথার স্বচ্ছ মুকুট, চোখ পড়ে না কারো তোমার পায়ের তলায় দলিত আমার প্রেম

(৭)

আমার পেছনে ডুব দেয় অনন্তকাল আমার সম্মুখে অমরত্ব আর আমি এ দুয়ের মধ্যিখানে মৃত্যু হল পুবাকাশের ধূসর প্রবাহমান বাতাস, মিশে যায় ভোরের নরম আলোয়, পশ্চিমে দিন শুরুর আগেই...


1 কমেন্টস্: