কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ২২ জুলাই, ২০১৭

অপরাহ্ণ সুসমিতো

দুই জীবন


খুব খারাপ আপনি। কোনোদিন কিছু বললেন না!
এর মানে তুমি এখন যাও তো, প্যাচর প্যাচর করো না। ঠিকাছে। আর পাঞ্জাবি পরেন না এটা ভালো হইছে। পাঞ্জাবি একটা বাঙাল কবিদের নির্ধারিত পোশাক। পরলেন তো মেইন্সট্রিম কবি হয়ে গেলেন। আপনি পরবেন ঐ যে বাইকারদের মতো  সানগ্লাস। আর আমার কোনো প্রশ্নের জবাব দেয়া লাগবে না। আপনার ঘরের সব  বালিশ ছুঁড়ে ছুঁড়ে মারছি।
ঘুমের সময় পার হয়ে যাচ্ছে, ঘুমান। আর প্রশ্ন করলেই উধাও হয়ে যান। কবে আসবেন? কোন বছর কোন মাস কত তারিখ? কোন তিথি? কোন নক্ষত্র? কবে কবে?...
আরও ২ কোটি ব্যাক্তিগত প্রশ্ন করব?
আপনাকে অভিশাপ দিলাম!

হয়তো আপনার সাথে আমার এটাই শেষ সংলাপন। সংলাপন বলে কোনো শব্দ বাংলা ভাষায় আছে কিনা আমি জানি না। সংলাপের সাথে আপনার আমার রেণু মিশিয়ে সংলাপন করে নিলামএই ৩৩এর শুরুতে বুঝে নিয়েছি আমার মায়ের নিজের ঘর ছিল না, যশোরের মাইকেল-গ্রামে ভয় পেতে পেতে বাবার সংসার করেছে, বাবার সাথে কুঁকড়ে শুয়ে থেকেছে। হয়তো ঋতুস্রাবের ঐ কয়েকটা দিন  বাদে বাবার ইচ্ছা সঙ্গমে সায় দিয়েছে।

মাঝে মাঝে আমি মায়ের নিরুপদ্রুপ মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকি। মুখের দিকে  তাকিয়ে নিজের একটা ঘরের কথা ভাবি। আচ্ছা বলেন তো, আমার কি সাধ্য আছে মাকে একটা নিজের ঘর বানিয়ে দিতে?
এই শহরে লাবণ্য নেই, সামান্য বৃষ্টিতে শহর থকথক ডুবে যায়। যার যেভাবে খুশি মাইক লাগিয়ে পরকাল চর্চা করতে থাকে কর্কশ উচ্চারণে। প্রতিদিন, অসহ্য প্রতিদিন!
এখন হসপিটালে বসে আছি। হাসপাতালে বসে চিপস খাচ্ছি। মেয়েরা হাঁ করে খেলে মানুষ খারাপ বলে। মেয়েরা সবার সামনে কলা খেতে পারে না। পা ছড়িয়ে বসতে পারে না। এটা পুরুষতন্ত্র। যদিও গরীব শ্রমজীবী মেয়েরা হাঁ করেই খায়। আপনাদের এসব বাল ছাল পুরুষতন্ত্র ওরা মানে না। ওরা প্রভাতফেরীও করে না, আপনাদের দু’পয়সা পাত্তাও দেয় না।

আমার অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে, খুব কষ্ট হচ্ছে। এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে দুনিয়ার কাউকে আমি ধর্তব্য মনে করি না। আপনাকেও না। মন খুলে বলতে পারলে বলতাম: চুদি না।
এটা হয়তো টেস্টোস্টেরেণের প্রভাব। কানে এয়ারজ্যাক গুঁজে বসে আছি। অজয় চক্রবর্তীর গানে তন্ময় হবার চেষ্টা করছি। ব্যথা নিয়ে গান শোনা কঠিন।

আমার বুকের ভেতর ধপধপ করছে। জামাকাপড় পাল্টাতে বসে খুলেই ক্লান্ত হয়ে গেছি, পরছি না আর। চোখের পাতা ভারি। মনে চাচ্ছে দূরে কোথাও চলে যাই। মনে চাচ্ছে বিড়াল পুষি। মনে চাচ্ছে আপনার সাথে কথাবার্তাহীন বসে থাকি। মনে চাচ্ছে আপনার সাথে কোনো কথা ছাড়া রাস্তায় হাঁটি। মনে চাচ্ছে আর কোনোদিন জামাকাপড় না পরি। অজয় চক্রবর্তী ভালো গায় খুব।

আজ ১৩ দিন হলো সিগারেট খাই না। গত ১ বছরে ৫ বছরের সিগারেট খাইছি  নিয়ম করে। নিকোটিন রক্তে মস্তিষ্কে প্রচন্ড নেশা তৈরি করে। ছাড়া এত সহজ না। আমি জিদ করে ছেড়েছি। আমার এই টানা বিষণ্ণতার এটাও একটা কারণ, বরং এটাই সায়েন্টিফিক কারণ। প্রতিজ্ঞা করেছি আপনি ঢাকায় আসার আগে পর্যন্ত  আমি মরে গেলেও সিগারেট ছোঁব না! আপনি আসলে তবে আপনাকে দেখতে দেখতে সিগারেট ধরাবো, আহা!

আমার চোখের পাতা আরও ভারি হয়ে এসেছে। দ্রুত চলে আসেন প্লিজ। এখানে মেঝেতে বসে থাকবো দেওয়ালে হেলান দিয়ে। কোনো একটা কালো অথবা ছাই রঙা জিন্স পরবেন, সাথে আমার মতো সূক্ষ্ণ চেক চেক শার্ট। আমাকে জামা পরতে বলবেন না প্লিজ! আমি কো্নো জামা পরবো না, জামা ছাড়া বেশ নিষ্পাপ লাগবে।  এই যে মেঝেতে বসে থাকবো, কথা বলব না। আমাকে যতই আগলি দেখাক, কোনো জামাকাপড় পরতে আমি পারবো না খুব হাল্কা লাগছে, জগত সংসারের সাথে লেনাদেনাহীন। কেমন?

আপনাকে দেখতে ইচ্ছা করছে। খুব।
ধ্যাত আপনার বন্ধু অভ্রের প্রতি রাগই হলো। কী যে সব লেখে আজকাল!
আমাকে নিয়ে ভাববেন না। মেয়ে মানুষের শরীরের কিছু হয় না, অনেক বছর বেঁচে থাকে।
আমার মাথাটা জ্বলে যাচ্ছে। আপনাকে একটা লেখা পাঠাচ্ছি। এটা পড়বেন।


1 কমেন্টস্:

  1. একার সাথে একা কথা। সামনে কারো উপস্থিতি থাকা না থাকা জরুরী নয়। অনায়েসে পৃষ্ঠা উলটে চলে যাই মনোগল্প পাঠ করে। সুন্দর।

    উত্তরমুছুন