কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০১৭

ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত

বৃষ্টি দিনে

এমন বৃষ্টি দিনে তোমার ড্রয়িংরুমে তোমাকে জড়িয়ে ধরে
কবিতার ঘন নীল অক্টোপাস প্রাণী
নিউ আলিপুর দমদম ডোভার লেনে রাস্তায় জমে যায় হঠাৎ জল

আমি তখন ব্যাঙ্কে দোকানে কাউন্টারে
অপেক্ষায় থাকি কখন নামবে জল থামবে বৃষ্টি
আবার সচল হবে নরনারী

যেতে পারতাম
বাজাতে পারতাম দরোজা ঘণ্টি
কিন্তু এখন দূরে থাকাই ভালো
জানি কবিতা মানুষকে বড় একলা করে দেয়

আমিও কবিতায় আছি থাকবো শেষদিন
একলা হলেও থাকবো
একান্ত সৌখিন
কেউ না থাকলেও থাকবো

আমার ভয় নেই
আমি ঠকতে শিখে গেছি
আমি হারতে শিখে গেছি

আমিও কবিতা লিখি নিজস্ব উল্লাসে
কবিতা ভালোবেসে
তোমার ড্রয়িংরুম থেকে ভেসে আসে বিথোভেন
নাচে নীল অক্টোপাস



বৃষ্টিতে অরণ্যে

বাইরে কোথাও যাই চলো অরণ্যে
একটা ভালো কিছু ভাবতে গেলে তোমাকে ছাড়া চলে না
অরণ্য মানে ইতিহাস নিয়মিত মৃত্যু ঘটেছে অতীতের
অনুরণন আছে আজও ধরবো চলো

অরণ্য মানেই যেন ঘুমোচ্ছে কেউ
আমার ভাবনাগুলো ভাববে সে ঘুম ভাঙলেই

অরণ্যে নিদ্রায়িত আমার স্বপ্নগুলো
জেগে উঠবে জীয়নকাঠি ছুঁয়ে দিলে
অরণ্যে জমে আছে সমস্ত প্রতিবাদ ভালোবাসা

কফি পট থেকে সুবাস ভেসে আসে
রাত্রি আসে

টানা ব্যালকনির ছাদ থেকে রিমঝিম বর্ষাজল
আরও একটা সকালে তুমি বৃষ্টি দেখছ
আমি শীতার্ত পিপাসার্ত হয়ে দেখছি আরও এক
মেঘলা সকাল

সময় জমে জমে যায় আনাচে কানাচে
জমে যায় শতাব্দী মিলেনিয়াম
তুমি কেঁদো না
তোমাকে ছুঁয়ে স্বপ্ন দেখব বলে
আমিও এসেছি কাছে

তোমার হৃদয় কি এতটাই শীতল
কান্নার ফোঁটারাও বরফ জমে গেছে
মুক্তোর মতো জমেছে কৃস্টাল  


স্পর্শাতীত দিনকাল 

স্পর্শাতীত দিনকাল নির্জনতার রাত
সর্বাধিক অন্ধকারে পাহাড়ি পথ চেনা দায়
ইতঃস্তত ঘরবাড়ি নিবু নিবু আলোর হলুদ
একটু একটু পাতা নড়ে

ঝড় উঠল বলে
ঝড় উঠুক সর্বব্যাপী আমি ঝড় চাই
মৃত্যুর আবর্জনা দেখে ক্লান্ত আমি জীবনের স্থিতি চাই
অবসন্ন আমি নিশ্চিন্ত শৈশব চাই

অন্ধকার পথঘাট
আকাশ ফাটানো বিদ্যুতের ঝলসানি চাই
খাঁড়ি ছুঁয়ে আসা ঝড় স্পর্শ করুক আমায়
এক আশ্রয় তাঁবু থেকে অন্য সন্ধানে আছি নিরবধি

এত কালো এত কালো উপত্যকা নেই শৃঙ্গ নেই
পৃথিবী যেন আজই নাচে ধ্বংস সঙ্গীতে

বিদ্যুল্লতা পথ দেখাও
সারি সারি পাইন ছুঁয়ে ওঠে নামে পথ
সমস্ত বাড়ির সবকটা নিবু নিবু
কাঁপে ঝড়ের দাপটে

এখন এটাই ভালো
পালা করে আলো আঁধারি
পাহাড়ি দেয়ালে আঘাত করে বজ্রনাদ
যেন ছুটে আসছে হাজার নায়াগ্রা

আমি ভীত হতে ভুলে যাই মাঝে মাঝে
এক নতুন পৃথিবী সৃষ্টি হতে পারে এমত রাতে


শূন্যতা! সাবধান!!

এই সব তাৎপর্য ফেলে দাও
ফেলে দাও কাঙ্গালিপনার ঝুটো উল্লাস
বাঁচো যদি মাপে বাঁচো
বছরে নয়
বছর ঘুরে যায় ঘুরে যায় অস্তিত্বহীনতায়
স্থান বানাও স্থান
বানিও না শূন্যতা

একটা আঘাত চোখে
আর একটা বুকে 
দেখ কিভাবে মৃত্যু আসে উল্লাসে
স্থান করে নিচ্ছে
সৃষ্টি হচ্ছে বিকল্প শূন্যতা

যুদ্ধ ইতিমধ্যেই ঘোষিত
আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে যে জমি

তা ছাড়ছি না

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন