কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০১৭

গৌরাঙ্গ মোহান্ত

মাছের সৌন্দর্যছায়া


ইভাসকুলার লেক থেকে মাছ উঠে আসবে বলে আমি হিমার্ত প্রভাত থেকে বসে থাকি ধবল বার্চের নিচে কাদার গহন আশ্রয় থেকে শরীর ভাসাতে সময় লাগবে জেনে আমি বনের দীর্ঘতার দিকে দৃষ্টি ফেরাইবসন্তের অবসন্নতার ভেতর কুয়াশা শক্তিশালী হয়ে ওঠে সূর্য লজ্জিত; কুহকী আঁধারে ডুবে আছে বন আমাকে ভিজিয়ে যায় অতি শীতল সাহসী বৃষ্টি উঁচু বৃক্ষরাজির দুর্বল শাখা শীতফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে অবিস্তীর্ণ পার্ক পাহাড় পথে যুবক-যুবতীরা নেমে পড়েলেকের গভীরে ঘন্টা বেজে ওঠে মাছেরা জলবক্ষে সাঁতার দিয়ে যায় আমি অজস্র মাছের ভেতর অনন্ত সৌন্দর্যের ছায়া দেখি; রক্তের উজ্জ্বলতার জন্য ছায়াকে জরুরি বলে চিনি


কুয়াশা কিংবা ব্রিজ


কুয়াশা কিংবা ব্রিজ আমাকে বিভ্রান্ত করে রাখে কৃষ্ণচূড়া ফল চিরন্তন পথের পরিচায়ক হতে পারে না জেনেও আমার রেটিনা গ্রহণ করতে পারে নি ভিন্ন কোনো দৃশ্যসংবাদ যে পথ গ্রহণকামী তা দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে ওঠে অস্পষ্টতার ভেতর কখনো জলবিভাজনের শব্দ শোনা যায় সাদা কালো ডানার পাখি শাসন করে খণ্ডিত আকাশ আকাশের অপূর্ণতার দিনে বুদ্ধিশূন্যতা তীব্রতা ধারণ করে অবরুদ্ধ আলোর ভেতর প্রত্যেকটি ব্রিজ নির্দিষ্ট মলুহা রাগ অনুশীলন করে নির্দিষ্টতাও ডেকে আনে বিপন্নতা নদী পেরিয়ে গেলে কি স্পষ্ট হয় রুপালি নদীরেখা ? মাছের নীরব আনন্দ অদৃষ্ট জলধারাকে পরিশ্রুত করে কিনা, আমি জানি না


রেইনবো ব্রিজ


একটি মাছরাঙাকে খুব কাছে ডেকে নিচ্ছিলো টোকিও বে অভিকর্ষ উদারতার দিকে তাকিয়ে আমি বন্ধুত্বপ্রত্যাশী হয়ে উঠলাম শীতল বাতাস যা আমার মুখমণ্ডল অচঞ্চল চুলের ভেতর বিমূর্ত নৃত্যের গাণিতিক বিক্ষেপ রচনা করছিলো, আলোকময় বৃত্তে ব্যাপ্ত হলো আমি আলোর  ভেতর দিয়ে রেইনবো ব্রিজের অনন্ত শুভ্রতার দিকে তাকালাম চলন্ত কার থেকে দৃষ্ট মন্তাজের ওপর বিন্যস্ত হলো অখণ্ড রেইনবোর স্বরূপত্ব রেইনবো ক্রমবর্ধমান গৃহে ছড়িয়ে দিচ্ছে বর্ণিল আলোর বেসাতি কথা ভাবতেই উষ্ণ প্রস্রবণে স্নাত সৃজিতার অনুরোধ প্রতিধ্বনিত হলো বে-তীরে তার জন্য একটি শিল্পকর্ম হন্যে হয়ে খুঁজেছি গতকাল আজ গভীর বুকপকেটে ভরে নিচ্ছি রেইনবোর শক্তিময় চেতনাচিত্র


সার্ভার অদৃশ্য হলে

সার্ভার অদৃশ্য হলে হাহাকার বেড়ে ওঠে আঙুলের ডগা থেকে বাক্য ফিরে যায় অস্থির আকাশে আকাশ কোনো দিন  প্রশান্ত হতে  শেখেনি তুমুল ধুলিঝড়ে অঘন চুল বিপন্ন হয়ে ওঠে ফ্লোরটাইলসে পড়ে থাকে বিগত জীবনের অনন্ত কণা বই, আইপ্যাড স্ক্রিন মুছে রাখি ধুলো বস্তুত অমোচ্য একবার সেলফোন নিইঅমল কণ্ঠের প্রত্যাশায় আমি কী কালবোধহীন হয়ে পড়ি? ওয়্যারড্রোবের ওপর পড়ে থাকে সেলফোন সার্ভারের জন্য বিমর্ষ, প্রতীক্ষা করি


মেঘের মেটামরফসিস


মেঘচূড়ায় সূর্যের শুভ্রতা পৃথিবীর একটি প্রান্তকে আলোড়িত করে তুলছে গতিময় বাহন থেকে আমি আপাত তাপহীন দৃশ্যের ভেতর তোমার অস্তিত্ব অনুভব করছি গোলকার্ধের বিশ্রান্ত পথে তুমি আচ্ছন্ন অতীতের করবীরসে রক্তিম করে তুলছো করতল হাতের অবিনাশী আভা মেঘের বিচিত্র স্থাপত্যে ক্রমশ ছড়িয়ে দিচ্ছে গভীর প্রলেপ মেঘের মেটামরফসিস অন্তর্গত তুলোর ভেতর রচনা করছে শ্রেষ্ঠ প্রহর দীপ্ত সুতো থেকে ঝরে পড়ছে তরল গান্ধার সাঙ্গীতিক তরলতা হাতের রঙ বিষয়ক অনুচিন্তনকে পৃথিবীর সমস্ত  উপাদান থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছে মেঘ আমাকে নির্জন করে রাখে


জলঘুড়ি


বাতানুকূল কক্ষে রং ছড়িয়ে রাখে না আরব সাগরের ঝিনুক তবুও সমস্ত শ্বাসযোগ্য বাতাসে ওড়ে ঝিনুকের জলঘুড়ি ঘুড়ির আশ্চর্য উড়ালরেখা ভরে থাকে হিমচাঁপার আলো আর গন্ধে চাও ফ্রাইয়ার বক্ষে টাল খেতে খেতে শেষ বেলা চলে যাবো কোনো এক ভিড়প্রবণ স্কাইট্রেন স্টেশনে স্কাইট্রেনের সাথে পাল্লা দিয়ে উড়ে যাবে জলঘুড়িহিমচাঁপাকোমল উজ্জ্বলতায় জেগে থাকবে আমার জল-মৃত্তিকা-বাতাসহীন ব্যক্তিগত পথ

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন