কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ৭ মে, ২০১৮

জপমালা ঘোষ রায়



জন্মান্তর

এই যে যোনিথরথর চাওয়াগুলো এই চাহিদার কোনো বানান হয় না, এমনকি, সব চোখ নিঙড়ে ফেলে সব মাংস দাঁতকুটো করেও গঠিত হয় না কোনো সমস্যমান পদ। অথচ কাকে বা বলি তমসা এত কেন দুধেলনিবিড়... পদে পদে কেন এত পদাবলী... মধুরকোমলকান্ত... হাইড্রোজেন বেলুনের নির্ভারে ওড়ে এই সব চাওয়াগুলো, যাদের চাহিদা বলে উল্লেখ না করাই ভালো। যাদের সংবেদনার কথা কখনো ভাবা হয় নি।

স্টেরয়েড অধ্যুষিত শরীর স্বমধুপায়ী, অর্গাজমে দেরী হয় খুব, অনেকটা আকাশ জুড়ে চাতক ওড়ার পর যেমন বৃষ্টি তেমনটাই। তবু বৃষ্টি এখনো... হয়... হবে... হয়তো। সিঞ্চিত করার আগেই পরিবেশ বিজ্ঞানের বই থেকে শিশুরাও  জেনে যাচ্ছে উদ্ভিদের প্রজাতি। সপুষ্পক অথবা অপুষ্পক।


বনসাই

কোনো কোনো বন্ধ্যাত্ব কিছুতেই ঘোচে না নলিনী, তোকে কী করে একই সঙ্গে তেলেজলে রপ্ত করাই নলজন্ম থেকে নলখাগড়ার যুদ্ধ! মনে হয় এর চেয়ে গর্ভ না থাকাই ভালো ছিল, ধারণের কোনো দায় থাকতো না। এইসব বিষবৃক্ষের কোনো উৎক্ষেপণ নেই, দুমড়নো পুংলিঙ্গ, অন্তর্বাসহীন প্রলম্বিত স্তন, খর্বনীবি থেকে কেউ ডালপালাও মেলছে না, হন্য শৈশব, স্তব্ধ যৌবন, বার্ধক্য অর্থহীন।

তোকে কী করে বোঝাই নলিনী, বনসাই বায়োলজি, কী করে টবের মধ্যে ঝুড়ি নামে! সেই টবের ভিতর আমরা... পাখিরা... যেন তেঁতুলপাতায় ১০০কোটি, যেন খুব মজার ‘আচ্ছে’ দিন! আহা! সারে জাঁহা সে আচ্ছা হিন্দুস্তাঁ। কী করে বোঝাই গণতন্ত্র বনসাই বট। কী করে এই দেখাগুলো, ভাবনাগুলো ইলাস্ট্রেট করবো! তুই বরং রাস্তাঘাট দেখ, বার্বি কিনে নে, পিৎজা খা। পুরো ময়দান নলখাগড়ার জঙ্গল হয়ে গেল যেন অপকর্ষ ম্যাজিকে। ধ্বজভঙ্গ গাছস্বপ্নগুলো কুঞ্চিত ভাঁড়ের মধ্যে পাকস্থলী খুলে রেখে দিচ্ছে গাছধর্মের প্রবল খিদে তৃষ্ণায়।


তুই না হলে

তুই না হলে এত মানুষের ঢল নামতো না। দিস্তা দিস্তা দুপুর জমা হত না ধৃষ্ট ফাইলে, মাইক্রোচিপটাও হারিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হত। তুই না হলে ইতস্তত বাস্তু ঘুঘুদের ঠোঁট খুলতেই চাইতো না ফিতের ফাঁস।

এক পেশাগতভাবে লাঠিয়াল কবি নিষ্ফল কোনো যন্ত্রণায় বয়ে নিয়ে যাওয়া কফিনের গায়ে ধুলোর কবিতা লিখেছিলেন, বিসমিল্লা + হে রাম। দুয়ে দুয়ে চার কোনোদিন হল না বলে তাঁকে কবি বলে মানা হল না কবিদের ইস্কুলে।

ছেঁড়া লংস্কার্ট তো আপ্রাণ চেষ্টা করেছে থ্যাঁতা যোনি ঢাকতে, স্ফুটনোন্মুখ কুঁড়িরা রক্তাক্ত মেরুন। প্রতারক বাতাস কতটা স্বেচ্ছাচার তোর আন্দাজে আছে কি না আমি জানি না, চুক্তি ফুক্তি খানা পিনা দরকার হলে বিচারের বাণীটানি হয়ে ফিরে আসবে ম্যানমেড ধনঞ্জয় মনস্টার।  পৃথিবীতে অনেক জারুল গুলঞ্চের পূর্ণোদ্দম পর্ণোগ্রাফ রাস্তাবাজির ভিতর দিয়ে, নির্বিকার রেড রোডে কনভয় এম্বুলেন্স ফালতু ছুটবে। তুইই ছোটাবি হেতালের প্রজন্ম, তুইই চেনাবি মেইন কালপ্রিট। ভেবে দেখবি, সব কি ঠিকঠাক হয়েছে? আদৌ কি হবে কখনো? ফাঁসুড়ে কে হত্যাকারী মানা হয় না। কোর্টচত্বর, ভাঙা দাঁড়িপাল্লা, মৃত বাঁধ চোখ, ধূর্ত টেবিল থেকে লাটাই গুটাবে পড়ন্ত বিকেল... রাত্রির ড্রয়ারে অপেক্ষমাণ নাটা মল্লিকের দড়ি...


দ্বিতীয় নির্মাণ - ১৪

আমাকে ক্ষরিত হতে হবে।

একচিমটে যতটুকু শীত, আমার শরীরকে প্রদাহহীন সুস্থে থাকতে দাও। কাঁটাগাছে হাঁড়িবেঁধে দিলেও স্তন চোঁয়ায়, প্রোলাক্টিন।

 আমাকে স্তনিত হতে হবে।

 সূর্য অনেকটা উত্তরায়ণে এবং প্রলম্ব বারান্দা থেকে রোদ্দুর সরে গেলে অবসন্ন ঘুঘুর খড়কুটো ঠোঁট  বিপন্নতা রেখে যায়। উপেক্ষার নিড্ ল গুলো সয়ে নিচ্ছি, নষ্ট নখ ও না-মাজা দাঁত সয়ে নিচ্ছি দুষ্টের।

আমাকে সহন রপ্ত করতে হবে দহনের আগে পর্যন্ত। অতঃপর আমাকে খাক নামে ডেকো।

মাটির চেয়ে কোনো উদবর্তন নেই জেনে, দেয়ালের অ্যাপ্রনে যত শ্লেষ্মা আর রক্তের ছিটে মুছে পরমহংসের ছবির মতো ঠোঁট ফাঁক করে, মৃদুহাস্য ক্ষমায় যৌন ও কাঞ্চন সকল শূন্য করে দাঁতের ফাঁক দিয়ে গলে যাবে রাত্রিনিষিক্ত সৌরক্ষরণ... ঋতুস্রাব।

আমি যৌনে ও জননেই থাকবো, বারবার মেয়েশিশুর জন্ম দেবো, সেইসব ফ্রক ইজের পুরনো বায়োলজি ক্লাস, ক্রোমোজোম x, y, হলুদ কুঞ্চিত সবুজ গোল... সবুজ কুঞ্চিত হলুদ গোল মটরদানার পরীক্ষিত সত্য বিগড়ে দিয়ে কণ্যাভ্রূণ, বড় আরামের যন্ত্রণা, বড় সৎ জন্ম...

আমাকে জন্ম দিতেই হবে

আমাকে জন্ম নিতেই হবে

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন